নবীজীর বিরুদ্ধে বিরােধিতার কৌশল সমূহ
বিরােধিতার কৌশল সমূহহযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর বিরুদ্ধে বিরােধিতার কৌশল সমূহ
কুরায়েশ নেতারা মুহাম্মাদ (ছাঃ)-কে ঠেকানাের জন্য বিভিন্ন পথ-পন্থা উদ্ভাবন করলেন। যেমন
(১) প্রথম পন্থা হিসাবে তারা বেছে নিলেন মুহাম্মাদের আশ্রয়দাতা আবু ত্বালেবকে দলে টানা। সেমতে নেতৃবৃন্দ সেখানে গেলেন এবং তাঁর নিকটে বাপ-দাদার ধর্মের দোহাই দিয়ে ও সামাজিক ঐক্যের কথা বলে মুহাম্মাদকে বিরত রাখার দাবী জানালেন। আবু তালিব স্থিরভাবে তাদের সব কথা শুনলেন। অতঃপর ধীরকণ্ঠে নরম ভাষায় তাদেরকে বুঝিয়ে বিদায় করলেন।
(২) হজ্জের সময় দাওয়াতে বাধা দেওয়া। হারামের এ মাসে কোন ঝগড়া-ফাসাদ নেই। অতএব এই সুযােগে মুহাম্মাদ বহিরাগতদের নিকটে তার দ্বীনের দাওয়াত পেশ করবেন এটাই স্বাভাবিক। সুতরাং তারা সিদ্ধান্ত নিল যে, এমন একটা অপবাদ মুহাম্মাদের বিরুদ্ধে তৈরী করতে হবে এবং তা সকলের মধ্যে রটিয়ে দিতে হবে, যাতে কোন লােক।
তার কথায় কর্ণপাত না করে। অলীদ বিন মুগীরাহ্র গৃহে বৈঠক বসল। এক একজন এক এক প্রস্তাব পেশ করল। কেউ বলল, তাকে ‘গণকার’ বলা হউক। কেউ বলল, ‘পাগল’ বলা হউক। কেউ বলল, কবি’ বলা হউক। সব শুনে অলীদ বললেন, আল্লাহর কসম! মুহাম্মাদ-এর কথাবার্তা বড়ই সুন্দর ও মিষ্ট-মধুর। তার কাছে কিছুক্ষণ বসলেই লােকেদের নিকট তােমাদের দেওয়া ঐসব অপবাদ মিথ্যা প্রতিপন্ন হবে।
তারা বলল, তাহলে আপনিই বলুন, কী বলা যায়। অলীদ অনেকক্ষণ ভেবে-চিন্তে বললেন, তার সম্পর্কে যদি কিছু বলতেই হয়, তবে বেশীর বেশী তাকে। ‘জাদুকর’ বলা যায়। কেননা তার কথা যেই-ই মন দিয়ে শােনে তার মধ্যে
জাদুর মত আছর করে (মুদ্দাছছির ৭৪/২৪) এবং লােকেরা তার দলে ভিড়ে যায়। ফলে আমাদের পিতা-পুত্রের মধ্যে, ভাই-ভাইয়ের মধ্যে, স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে, আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে এমনকি গােত্রে-গােত্রে বিভক্তি সৃষ্টি হয়ে গেছে। আর এসবই হচ্ছে তার কথার জাদুকরী প্রভাবে। অতএব তাকে ‘জাদুকর’ বলাই যুক্তিযুক্ত। অতঃপর সবাই একমত হয়ে আসন্ন হজ্জের মৌসুমে শতমুখে তাঁকে ‘জাদুকর’ বলে প্রচার করার সিদ্ধান্ত নিয়ে। বৈঠক ভঙ্গ করল। অতঃপর মক্কার পথে পথে হাজীদের নিকট এই মিথ্যা অপবাদ প্রচার করার জন্য লােক নিয়ােগ করল, যেন তারা রাসূল (ছাঃ)-এর ব্যাপারে সবাইকে সাবধান। করে' (ইবনু হিশাম ১/২৭০)।
বস্তুতঃ যুগে যুগে সমাজ সংস্কারক নেতাদের বিরুদ্ধে স্বার্থপর সমাজ ও রাজনৈতিক | নেতারা এবং মিডিয়ার দুষ্টু লােকেরা পরিকল্পিতভাবে মিথ্যাচার করেছে, আজও করে যাচ্ছে। কেবল যুগের পরিবর্তন হয়েছে। মানসিকতার কোন পরিবর্তন হয়নি।
No comments