Header Ads

Header ADS

অলীদ কে ছিলেন?

অলীদ বিন মুগীরা আল-মাখযুমী কে ছিলেন?

অলীদ কে ছিলেন?

অলীদ বিন মুগীরা আল-মাখযুমী ছিলেন মক্কার অন্যতম সেরা ধনী। আল্লাহ তাকে ধনৈশ্বর্য ও সন্তান-সন্ততির প্রাচুর্য দান করেছিলেন। ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, তিনি নিজেকে বলতেন ‘অহীদ ইবনুল অহীদ’ (আমি অদ্বিতীয়ের পুত্র অদ্বিতীয়)। সারা আরবে আমার ও আমার পিতার কোন তুলনা নেই। তার এই ধারণা বিষয়ে আল্লাহ বলেন, ‘ছাড় আমাকে এবং যাকে আমি সৃষ্টি করেছি অদ্বিতীয় করে’ (মুদ্দাছছির ৭৪/১১)
তার ফসলের ক্ষেত, পশু চারণ ক্ষেত্র ও বাগ-বাগিচা মক্কা হতে ত্বায়েফ পর্যন্ত (প্রায় ৯০ কি. মি.) বিস্তৃত ছিল (তাফসীর কুরতুবী)। শীত-গ্রীষ্ম উভয় মৌসুমে তার ক্ষেতের ফসল ও বাগানের আয়-আমদানী অব্যাহত থাকত। তার সন্তান-সন্ততি তার সাথেই থাকত। এদিকে ইঙ্গিত করে আল্লাহ বলেন, তাকে আমি দিয়েছিলাম প্রচুর ধন-সম্পদ। এবং সদাসঙ্গী পুত্রগণ। আর তাকে দিয়েছিলাম প্রচুর সচ্ছলতা’ (মুদ্দাছছির ৭৪/১২-১৪)

একদিন তিনি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নিকটে আসেন। তখন তিনি তাকে কুরআন শুনান। তাতে তার অন্তর গলে যায়। একথা আবু জাহলের কানে পৌছে যায়। তখন তিনি তার কাছে এসে বলেন, হে চাচা! আপনার সম্প্রদায়ের লােকেরা আপনার জন্য অনেক টাকা জমা করতে মনস্থ করেছে আপনাকে দেওয়ার জন্য।
কেননা আপনি মুহাম্মাদের কাছে। গিয়েছিলেন। জবাবে তিনি বললেন, কুরায়েশরা ভালাে করেই জানে যে আমি তাদের মধ্যে সবচেয়ে বড় ধনী। তখন আবু জাল বললেন, আপনি তার ব্যাপারে এমন কিছু কথা বলুন যাতে আপনার সম্প্রদায়ের লােকেরা বােঝে যে আপনি মুহাম্মাদ যা বলেছে,তা অস্বীকারকারী।
জবাবে তিনি বললেন, আমি তার সম্পর্কে কি বলব? আল্লাহর কসম! তােমাদের মধ্যে কবিতা বিষয়ে আমার চাইতে বিজ্ঞ কেউ নেই। আল্লাহর কসম! তিনি। যা বলেন, তা কোন কিছুর সাথেই তুলনীয় নয়। কৃাতাদাহ বলেন, লােকেরা ধারণা করত।

লােকটি যা বলেন সে বিষয়ে আমি গভীরভাবে চিন্তা করেছি। এটি কোন কবিতা নয়। নিশ্চয়ই এর রয়েছে বিশেষ মাধুর্য। এর উপরে রয়েছে বিশেষ অলংকার। নিশ্চয়ই এটি। বিজয়ী হবে, বিজিত হবে না। আর আমি যা সন্দেহ করি তা এই যে, এটি জাদু। এভাবে সবকিছু স্বীকার করার পরও অহংকার বশে ও কুরায়েশ নেতাদের চাপে তিনি। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর নবুঅতকে স্বীকৃতি না দিয়ে বিরুদ্ধাচরণের পথ বেছে নিলেন।


ওইদিন অলীদের গৃহে অনুষ্ঠিত বৈঠকে রাসূল (ছাঃ)-কে ‘জাদুকর’ বলে প্রচার করার | সিদ্ধান্তের ঘটনা এবং অলীদের বাকভঙ্গী আল্লাহ নিজস্ব রীতিতে বর্ণনা করেন নিম্নোক্ত ভাবে-

সে চিন্তা করল ও মনস্থির করল। ধ্বংস হৌক সে কিরূপ মনস্থির করল’? ‘ধ্বংস হোক  সে কিরূপ মনস্থির করল’? ‘অতঃপর সে তাকাল। অতঃপর কুঞ্চিত করল ও মুখ  বিকৃত করল। অতঃপর পৃষ্ঠ প্রদর্শন করল ও অহংকার করল। তারপর বলল, অর্জিত। জাদু বৈ কিছু নয়। এটা মানুষের উক্তি বৈ কিছু নয়’ (মুদ্দাছছির ৭৪/১৮-২৫)।


অত্র সূরায় ১১ হতে ২৬ পর্যন্ত ১৬টি আয়াত কেবল অলীদ সম্পর্কেই নাযিল হয়েছে। দেখা যাচ্ছে যে, অলীদ রাসূল (ছাঃ)-কে ‘মিথ্যাবাদী’ বলতে সাহস করেননি। তাই  অবশেষে কালামে পাকের জাদুকরী প্রভাবের কথা চিন্তা করে তিনি রাসূল (ছাঃ)-কে ‘জাদুকর’ বলে অপবাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলেন। এতে আল্লাহ তাকে পরপর দু'বার অভিসম্পাৎ দিয়ে বলেন, ধ্বংস হৌক সে কিরূপ মনস্থির করল’?

‘ধ্বংস হৌক সে কিরূপ মনস্থির করল’? অতঃপর বললেন, সত্বর আমি তাকে ‘সাক্বার’ নামক জাহান্নামে প্রবেশ করাবাে’ (মুদ্দাছছির ৭৪/২৬)অলীদ বিন মুগীরাহ হিজরতের তিনমাস পর ১৫ বছর বয়সে কাফির অবস্থায় মক্কায় মৃত্যুবরণ করেন এবং হাজুনে সমাহিত হন।


ইবনু কাহীন, তাফসীর সূরা মুদ্দাহক্তি ১৮-২৪ আয়াত; ইবনু হিশাম ১/২৭০-৭১।

No comments

Powered by Blogger.