Header Ads

Header ADS

গাজওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে নবীজীর ভবিষ্যৎ বাণী

রসুল (সা.) হিন্দুস্থানের যুদ্ধ বিষয়ে সাহাবাদের কি বলেছিলেন
আপনি জানেন কি?
আগামী কোন যুদ্ধের শহীদরা বদর অথবা উহুদের যুদ্ধের শহীদদের মত মর্যাদা পাবে?
আসুন জেনে নেই কে বা কাহারা সেই সৌভাগ্যবান!
.


গাযওয়াতুলহিন্দ কিঃ

.
গাজওয়াতুল হিন্দ মানেই হিন্দুস্থানের যুদ্ধ । নামটি হাদীসের ভাষা থেকে নেয়া, হিন্দুস্থান অর্থাৎ ভারতীয় উপমহাদেশ। ভারতীয় উপমহাদেশের এই চূড়ান্ত যুদ্ধকে রাসূল (স:) নামকরণ করেছেন “গাজওয়াতুল হিন্দ”।
.
ইসলামের যুদ্ধকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়।
১) গাজওয়া
২) শিকওয়া বা সারিয়া
.
যে যুদ্ধ-জিহাদে রসূল (স:) নিজেই অংশগ্রহণ করেছেন তাকে গাজওয়া বলে এবং যুদ্ধ-অভিযানে তিনি (স:) অংশগ্রহণ করেননি তাকে ক্ষেত্র বিশেষে শিকওয়া বা সারিয়া বলে। সুতারাং গাজওয়া রসূল (স:) এর জন্যে খাস ও একটি বিশেষ পরিভাষা,জিহাদের এক বিশেষ মাক্বাম।
.
রসূল (স:) ভারত অভিযান ও বিজয়ের সুসংবাদ দিয়েছেন । আর এই অভিযান-যুদ্ধ যখন হবে তখন তিনি দুনিয়াতে থাকবেন না তিনি জানতেন।

সুতরাং এই যুদ্ধ শিকওয়া হওয়ার কথা। অথচ তিনি এই যুদ্ধের নাম দিয়েছেন গাজওয়া-“এমন যুদ্ধ যে যুদ্ধে স্বয়ং নবীজি উপস্থিত থাকেন।” এটি একটি সম্ভাষণ, গুরুত্ত্বের প্রাধান্য ও মর্যাদার মূল্যায়ন। এ যুদ্ধ যেন এমন – যারা এই যুদ্ধে শরীক হবে তারা যেন নিজেদের সাথে রসূল (স:) পেল! সুবহানাল্লাহ! যুদ্ধটির নাম গাজওয়া হওয়ার সম্ভাব্য আরো কারণ থাকতে পারে।
.

যেমন এটি মুশরিক/মালাউনদের সাথে মুসলিমদের চূড়ান্ত যুদ্ধ। যুদ্ধের প্রচন্ডতা,পরিবেশ, মুসলিম ও মুশরিকদের বৈষম্যমূলক অবস্থান, ঈমানদারদের স্বল্পতা,কঠিন পরীক্ষা,চূড়ান্ত বিজয়সহ ভারতীয় উপমহাদেশকে সার্বিকভাবে শিরকের মূলোৎপাটনের মাধ্যমে দারুল ইসলামের অন্তর্ভুক্ত করার কারণেও হতে পারে।
.
আসুন কিছু হাদিস এ সম্পর্কে পড়ে নেওয়া যাকঃ
.
১/ “হযরত সাওবান (রা:) হযরত আবু হুরায়রা (রা:) কে বলতে শুনেছেন যে, রসূল (স:) হিন্দুস্তানের কথা উল্লেখ করেছেন এবং বলেছেন, “অবশ্যই আমাদের একটি দল হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে,আল্লাহ্ সেই দলের যোদ্ধাদের সফলতা দান করবেন, আর তারা রাজাদের শিকল/বেড়ি দিয়ে টেনে আনবে এবং আল্লাহ্ সেই যোদ্ধাদের ক্ষমা করে দিবেন (এই বরকতময় যুদ্ধের দরুন) এবং সে মুসলিমেরা ফিরে আসবে তারা ঈসা ইবনে মারিয়াম (আ:) কে শামে (সিরিয়া) পাবে।”
.
সুতরাং “গাজওয়াতুল হিন্দ” হল ভারতীয় উপমহাদেশের মুসলিমদের ভারতের মালাউনদের বিপক্ষে চূড়ান্ত যুদ্ধ যেখানে মুসলিমরা বিজয়ী হবে। হাদীসে বর্ণীত ‘হিন্দ/হিন্দুস্থান’ হল অবিভক্ত ভারতীয় উপমহাদেশ যা গ্রেটার খোরাসানের কিছু অংশ,পাকিস্থান,ভারত,বাংলাদেশ,নেপাল ও শ্রীলঙ্কা নিয়ে গঠিত।
.
২/ আবু হুরায়রা (রাঃ) কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেনঃ “আল্লাহর রসুলুল্লাহ (স:) আমাদের থেকে হিন্দুস্থানের সঙ্গে যুদ্ধ করার প্রতিশ্রুতি নিয়েছেন। কাজেই আমি যদি সেই যুদ্ধের নাগাল পেয়ে যাই, তাহলে আমি তাতে আমার জীবন ও সমস্ত সম্পদ ব্যয় করে ফেলব। যদি নিহত হই, তাহলে আমি শ্রেষ্ঠ শহীদদের অন্তর্ভুক্ত হয়ে যাবো। আর যদি ফিরে আসি, তাহলে আমি জাহান্নাম থেকে মুক্তিপ্রাপ্ত আবু হুরায়রা হয়ে যাবো।”
–(সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬,পৃষ্ঠা ৪২)
.
৩/ আবু হুরায়রা (রাঃ) বলেন, “আমি যদি সেই গাজওয়া পেতাম,তাহলে আমার সকল নতুন ও পুরাতন সামগ্রী বিক্রি করে দিতাম এবং এতে অংশগ্রহণ করতাম। যখন আল্লাহ্ আমাদের সফলতা দান করতেন এবং আমরা ফিরতাম,তখন আমি একজন মুক্ত আবু হুরায়রা হতাম,যে কিনা সিরত ঈসা এই যুদ্ধমপ্রতি আল্লাহর করুণা ও মাগফিরাতের নমুনা বর্ণনা করতে গিয়ে নবীজি ঈসা (আ:) এর বাহিনীর সাথে তুলনা করেছেন এবং বলেছেন- আমার উম্মতের দুটি দল এমন আছে,
আল্লাহ যাদেরকে জাহান্নাম থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন। একটি হলো তারা যারা হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে,আরেক দল হলো যারা ঈসা ইবনে মারিয়ামের সঙ্গী হবে।”
–(সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)
.
সুতরাং এই যুদ্ধ একটি সুনির্ধারিত, সুনির্দিষ্ট এবং প্রতিশ্রুত চূড়ান্ত যুদ্ধ। ভারতের সকল যুদ্ধই যেহেতু আম ভাবেই গাজওয়াতুল হিন্দ তাই অনেকেই বলে গাজওয়াতুল হয়ে গেছে। অনেকে মুহাম্মাদ বিন কাসিমের সিন্ধু (ভারত) বিজয়ের অভিযানকেও গাজওয়াতুল হিন্দ বলে থাকেন।.
.
এ ক্ষেত্রে তারা চরম ভ্রান্তির শিকার।
হ্যা,হিন্দুস্তানের সকল যুদ্ধই সাধারণভাবে গাজওয়াতুল হিন্দ (হিন্দের যুদ্ধ)। কিন্তু উপরে আলোচিত গাজওয়াতুল হিন্দ খা’স ও পারিভাষিক ভাবেই এটি আলাদা ও স্বতন্ত্র এবং এটি অদ্যাবধি সংগঠিত হয়নি ।
.
প্রথমতঃ সমস্ত ভারতীয় উপমহাদেশ নিয়ে কখনোই একযুগে হিন্দু-মুসলিমদের মধ্যে যুদ্ধ হয়নি।
.
এবং ভারতে কখনোই নিরঙ্কুশভাবে ইসলাম বিজয়ী হয়নি ও হিন্দত্ববাদও মিটে যায়নি।
.
দ্বিতীয়তঃ আল্লাহর রসূল (স:) আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে সমস্ত দুনিয়ার প্রতিটি কাঁচা-পাকা ঘরে ইসলাম পৌঁছাবে। এবং ইমাম মাহদী ও ঈসা (আ:) সমগ্র দুনিয়া বিজয় করবেন। সে হিসেবে ভারতীয় উপনহাদেশের প্রতিটি ঘরে তাওহীদের কালেমা পৌঁছাবেই, হিন্দুরা পরাজিত হবেই, কিন্তু ভারতে এখন সংখ্যাগরিষ্ঠ হল হিন্দুরা!
.
কিন্তু সনাতনিদের ক্রমবর্ধমান হিন্দুত্ববাদের প্রতিষ্ঠা, বর্ধিষ্ণু গোঁড়ামিপূর্ণ পৌত্তলিকতা, ইসলাম বিদ্বেষভাব, মুসলিমদের উৎখাত, ভারত শুধুই হিন্দুত্ববাদের ভূমি এসব চিন্তাধারার প্রতিষ্ঠা এবং হাজার বছরের বিদ্বেষ,ক্রোধ,প্রতিশোধপরায়ণতা ক্রমেই হিন্দুবাদীদের ইসলামের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিচ্ছে, একটি যুদ্ধের সূত্রপাত দৃষ্টিগোচর হচ্ছে এবং এসব হিন্দুদের ফায়সালার জন্যেও একটি যুদ্ধ অবশ্যম্ভাবী হয়ে আছে। তাই হিন্দু-মুসলিমের এই পরস্পরবিরোধী স্রোতের সমাধানের জন্যে একটি যুদ্ধ হবেই আর সেটাই হবে “গাজওয়াতুল হিন্দ”। ইন-শা-আল্লাহ
.
তৃতীয়তঃ হাদীসে দুইটি দলের জন্যে জাহান্নাম থেকে পরিত্রাণের সুসংবাদ এসেছেন:
.
১) শামের মুজাহিদীন
২) হিন্দুস্থান অভিযানকারী।

.
“আমার উম্মতের দুটি দল এমন আছে, আল্লাহ যাদেরকে জাহান্নাম থেকে নিরাপদ করে দিয়েছেন। একটি হল তারা, যারা হিন্দুস্তানের সাথে যুদ্ধ করবে, আরেক দল তারা যারা ঈসা ইবনে মারিয়ামের সঙ্গী হবে।”
— (সুনানে নাসায়ী, খণ্ড ৬, পৃষ্ঠা ৪২)
.
এখানে একই হাদীসে শামের সাথে হিন্দুস্থানের যুদ্ধাদের আলোচনা থাকার কারণেও উভয় যুদ্ধটি সমসাময়িক হওয়ার সম্ভাব্যতা থাকে।
.
চথুর্থতঃ আমাদের এই দলীলটি এতই স্পষ্ট ও সন্দেহাতীত এবং এর পরে আর কোন কিছুই লাগেনা।
.
হাদীসে এসেছে যে- “গাজওয়াতুল হিন্দের যুদ্ধারা যুদ্ধ বিজয় করে হিন্দু রাজাদের বন্দী করে শামে (সিরিয়ায়) যাবে এবং সেখানে পৌঁছে ঈসা (আঃ) পেয়ে যাবেন!
.
সুবহানাল্লাহ! তাহলে এটি হবে ঈসা (আঃ) এর সমসাময়িক। তখন শামে ঈসা (আঃ) আগমন করবেন ও যুদ্ধরত থাকবেন। আর ঈসা (আঃ) এর কয়েক বছর আগে যেহেতু ঈমাম মাহদী আসবেন।
.
আর হিন্দের যোদ্ধারাও যুদ্ধ বিজয়ের পর অর্থাৎ বেশ কয়েক বছর যুদ্ধ করে বিজয়ী হবে তাই এ ব্যাপারে সংশয় থাকে না গাজওয়াতুল হিন্দের সময় শামে ঈমাম মাহদী থাকবেন। আর ঈমাম মাহদী হবে সম্মিলিত নেতা এবং মুসলিম উম্মাহ তার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ থাকবে, তাই তিনি ঐ সময়ের সব ফ্রন্টেরই নেতৃত্ব দিবেন। যেহেতু ইমাম মাহদি বা ঈসা (আ) আসেনি এখনো অতএব “গাজওয়াতুল হিন্দ” হয়নি।
.
শীঘ্রই হবে ইন-শা-আল্লাহ।
.
গাজওয়াতুল হিন্দ সম্পর্কে বলা হয়েছে এটা হবে কাফির মুশরিকদের সাথে মুসলমানদের পৃথিবীর ভিতরবৃহত্তম জিহাদ/যুদ্ধ। এই যুদ্ধে হিন্দুস্তানের মোট মুসলিমদের এক তৃতীয়াংশই শহীদ হবে, আরেক অংশ পালিয়ে যাবে আর শেষ অংশ জিহাদ চালিয়ে যাবে।

No comments

Powered by Blogger.